-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার প্রভাবের সঙ্গে যুঝতে থাকা মায়ানমারের বিদেশি-সমর্থিত অবকাঠামো উন্নয়নের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
২৮ মার্চ মায়ানমারে রিখটার স্কেলে ৭.৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর কেন্দ্রস্থল ছিল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের কাছে সাগাইং অঞ্চলে। তার পর থেকে প্রায় ৬৭টি আফটারশক (ভূমিকম্প-পরবর্তী অনুরণন) অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পটি ৫৭টি শহরের ১ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষকে মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত করেছে, যার মধ্যে ৯০ লক্ষেরও বেশি মানুষ গুরুতর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই সব কিছুই এই অঞ্চলে ইতিমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক সঙ্কটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ৬ এপ্রিল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩,৪৭১ জনে দাঁড়িয়েছে; ৪,৬৭১ জনেরও বেশি মানুষ আহত এবং ২১৪ জন নিখোঁজ রয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা (ইউএসজিএস) অনুসারে, মৃতের সংখ্যা ১০,০০০ থেকে ১০০,০০০-এর মধ্যে হওয়ার ৩৫ শতাংশ সম্ভাবনা এবং ১,০০,০০০-এরও বেশি মানুষের মৃত্যুর ৩৩ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। ইউএসজিএস আরও অনুমান করেছে যে, ধ্বংসের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের ৭০ শতাংশ। তাইল্যান্ড এবং চিন পর্যন্ত এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল।
ভূমিকম্পের প্রতিক্রিয়ায় হুন্তা নেতা মিন অং লাইং সাগাইং মান্দালয় এবং ম্যাগওয়ে-সহ ছ’টি অঞ্চলকে জরুরি অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করেছেন এবং উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশের অভাবী মানুষদের সাহায্য করতে ইচ্ছুক যে কোনও সংস্থা এবং দেশকে উন্মুক্ত আমন্ত্রণ।’ মায়ানমারকে সাহায্য করার জন্য ভারত, চিন, সংযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সিঙ্গাপুর আর্থিক সহায়তা, চিকিৎসা কর্মী ও ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করেছে। এ বিষয়ে চিন সর্বোচ্চ অবদান রেখেছে এবং মানবিক সহায়তায় ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ও তাদের মানবিক অংশীদাররা প্রাথমিক ভাবে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে এবং জরুরি চিকিৎসা দল, আশ্রয় সামগ্রী ইত্যাদি মোতায়েন করেছে। ৪ এপ্রিল সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমস্টেক) শীর্ষ সম্মেলনে মিন অং লাইং এবং অন্যান্য আঞ্চলিক নেতা প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থার মাধ্যমে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেছেন।
ভূমিকম্পটি ৫৭টি শহরের ১ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষকে মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত করেছে, যার মধ্যে ৯০ লক্ষেরও বেশি মানুষ গুরুতর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই সব কিছুই এই অঞ্চলে ইতিমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক সঙ্কটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
প্রাণহানির পাশাপাশি ভূমিকম্পে অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি এবং ঐতিহ্যবাহী স্থান ধ্বংস হয়েছে। স্কাই ভিলা, মহামুনি, আনন্দ প্যাগোডা এবং মান্দালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাগাইং অঞ্চলে ইরাবতী নদীর ওপারে সাগাইংয়ের সঙ্গে মান্দালয়ের সংযোগকারী প্রায় ৯০ বছরের পুরনো আভা সেতুটি ভেঙে পড়েছে। মা শি খানা প্যাগোডা-সহ বেশ কয়েকটি মঠ এবং ধর্মীয় স্থানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ধ্বংসের মাত্রা ও ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলির পরিপ্রেক্ষিতে, এই দুর্যোগ কী ভাবে বিদ্যমান বিদেশি-সমর্থিত অবকাঠামো প্রকল্পগুলিকে ব্যাহত করতে পারে তা মূল্যায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে চিন ও ভারত দ্বারা সমর্থিত প্রকল্পের কথা আলোচনা করা জরুরি। কারণ এই দু’টি দেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।
চিনা অবকাঠামোগত অংশীদারিত্ব
মায়ানমারে চিনের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে চায়না-মায়ানমার ইকোনমিক করিডোরের (সিএমইসি) অধীনে সড়ক ও রেলপথ এবং লেটপাডাউং তামা খনি ও তাগাউং নিকেল প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্টের মতো বৃহৎ আকারের খনি ও শিল্প উদ্যোগ। অপারেশন ১০২৭-এর পরে মায়ানমারের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তার দৃশ্যপট উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলি (ইএও) রাখাইন, উত্তর শান স্টেট, সাগাইং অঞ্চল এবং মধ্য মায়ানমারের কৌশলগত এলাকা-সহ বিশাল অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে। ফলস্বরূপ, মায়ানমারে চিনের ৩৪টি প্রধান প্রকল্পের মধ্যে ২৩টি প্রকল্পের উপর এই গোষ্ঠীগুলির প্রভাব পড়েছে।
সর্বোপরি, সামরিক হুন্তার সঙ্গে চিনের ঘনিষ্ঠতা মায়ানমারের জনসংখ্যার একটি অংশের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, যার পরিণতি ২০২৪ সালের অক্টোবরে চিনা দূতাবাসে হামলা। এর প্রতিক্রিয়ায় চিন ও হুন্তা চিনা বিনিয়োগ রক্ষার জন্য একটি চিন-মায়ানমার যৌথ নিরাপত্তা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হয়েছে। যৌথ নিরাপত্তার সমর্থকরা যুক্তি দিয়েছেন যে, এটি জাতিগত গোষ্ঠী ও স্থানীয় প্রতিরোধের আক্রমণ থেকে বিনিয়োগকে রক্ষা করবে। তবে সমালোচকরা সতর্ক করে বলেছেন যে, বিদেশি নিরাপত্তা বাহিনীকে তার সীমান্তের মধ্যে কাজ করার অনুমতি দিয়ে এটি আসলে মায়ানমারের সার্বভৌমত্বকেই ক্ষুণ্ণ করছে।
সামরিক হুন্তার সঙ্গে চিনের ঘনিষ্ঠতা মায়ানমারের জনসংখ্যার একটি অংশের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, যার পরিণতি ২০২৪ সালের অক্টোবরে চিনা দূতাবাসে হামলা।
নিরাপত্তা সংস্থাটি হিংসাত্মক গোষ্ঠী ও স্থানীয়দের তরফে আসা প্রকল্পের বিরোধিতা থেকে বিনিয়োগ রক্ষা করতে পারলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে তা রক্ষা করা সম্ভব নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের কথাই। কারণ এটি এমন অঞ্চলগুলিকে প্রভাবিত করেছে, যেখানে প্রধান সিএমইসি প্রকল্পগুলি কার্যকর বা নির্মাণাধীন, বিশেষ করে মান্দালয় অঞ্চলে। মান্দালয় শহরের ৩২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে মাদায়া টাউনশিপে অবস্থিত চিন-সমর্থিত আলফা সিমেন্ট প্ল্যান্ট এবং চিন-মায়ানমার পাইপলাইনের মতো প্রকল্পগুলি রয়েছে, যা রাখাইন স্টেট থেকে মান্দালয় ও ম্যাগওয়ে হয়ে শান স্টেটে তেল ও গ্যাস পরিবহণ করে ইউনান পৌঁছনোর আগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ক্ষেত্রে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন প্রাথমিক অংশীদার।
আর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অর্থাৎ মুসে-মান্দালয়-কিয়ুকফিউ রেলপথ পরিকল্পনা পর্যায়ে থাকলেও তা বেজিংয়ের জন্য বিশেষ অগ্রাধিকার। চিন এই ধরনের অনেক প্রকল্প ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে, বিশেষ করে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে শান স্টেটে যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর থেকে। এই প্রচেষ্টাটি মায়ানমারে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত মা জিয়ার ২৬-২৮ ফেব্রুয়ারি সফরের মাধ্যমেও স্পষ্ট, যেখানে তিনি প্রকল্পগুলির কাজ শুরু করার জন্য শান স্টেটের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তবে ভূমিকম্প ও তার ফলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ অনিবার্য ভাবে এই প্রকল্পের সময়সীমাকে ব্যাহত করবে, যা মায়ানমারে চিনের বিনিয়োগ কৌশলকে আরও জটিল করে তুলবে।
ভারতের উদ্বেগ
মায়ানমারের পঞ্চম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং ১১তম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী হিসেবে, ভারত অভিন্ন সাধারণ সীমান্ত এবং ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণে শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ বজায় রেখেছে। মায়ানমারে ভারতীয় বিনিয়োগ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যমান। তবে এই বিনিয়োগ মূলত তেল ও গ্যাসের উপর কেন্দ্রীভূত। ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড অসমের নুমালিগড় থেকে সাগাইং সীমান্তে মোরিয়া পর্যন্ত ৪২১ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের মাধ্যমে মায়ানমারে তেল রফতানি করে আসছে।
ভূমিকম্পের ফলে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ প্রকল্প অর্থাৎ ভারত-মায়ানমার-তাইল্যান্ড ট্রাইল্যাটেরাল হাইওয়ে (আইএমটি-টিএইচ) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা মান্দালয় ও সাগাইং অঞ্চলের মধ্য দিয়ে যায়। উভয় অঞ্চলেই ব্যাপক কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে, যার মধ্যে একটি বাঁধ ভেঙে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে এবং মান্দালয়-ইয়াঙ্গন মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির মধ্যে অন্যতম হল সাগাইং। এই অঞ্চলে প্রায় ৭০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে এবং আভা সেতুর বেশির ভাগ অংশ-সহ ৯০ শতাংশ কাঠামো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এই ব্যাপক ধ্বংসলীলার প্রেক্ষিতে এ কথা উল্লেখ্য যে, এই অঞ্চলের আইএমটি-টিএইচ অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। তবে তার সুনির্দিষ্ট মূল্যায়ন এখনও করা হয়নি। ভূমিকম্পের আগেও মায়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে প্রকল্পটি বিলম্বিত হয়েছিল, কালেওয়া-ইয়াগির মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি নির্মাণাধীন ছিল এবং প্রকল্পের সমাপ্তির সময়সীমা অনিশ্চিত ছিল। ভূমিকম্পের প্রভাব এই প্রকল্পগুলির নির্মাণ আরও বিলম্বিত করতে পারে।
উভয় অঞ্চলেই ব্যাপক কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে, যার মধ্যে একটি বাঁধ ভেঙে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে এবং মান্দালয়-ইয়াঙ্গন মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ দিকে মায়ানমারে ভারতের আর একটি প্রধান উদ্যোগ অর্থাৎ কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত না-ও হতে পারে। কারণ এর মূল অবস্থানগুলি অর্থাৎ সিটওয়ে বন্দর এবং পালেতোয়ার অভ্যন্তরীণ জলপথ আসলে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে অনেক দূরে রাখাইন এবং চিন স্টেটে অবস্থিত। তবে দুর্যোগের সম্মিলিত প্রভাব ও মায়ানমারের বিদ্যমান সংঘাত এখনও প্রকল্পের সময়সীমা ও পরিচালনার দিকগুলিকে ব্যাহত করতে পারে।
ক্রমবর্ধমান প্রতিক্রিয়া
মায়ানমারে বিদ্যমান সংঘাত দেশের অবকাঠামো প্রকল্পগুলির সময়মত সমাপ্তির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। নানাবিধ গবেষণা দর্শায় যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রায়শই সংঘাতকে আরও বাড়িয়ে তোলে, বিশেষ করে রাজনৈতিক ভাবে ভঙ্গুর ও অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল দেশগুলিতে, যেমনটা মায়ানমারে দেখা গিয়েছে। ভূমিকম্পের পরের পাঁচ দিনে মায়ানমারের সেনাবাহিনী ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত সাগাইং এবং মান্দালয় অঞ্চল-সহ ১১টি এলাকায় ৩২টি বিমান বোমা হামলা চালায়, যার ফলে ৫০ জন নিহত এবং ৪৯ জন নাগরিক আহত হয়।
অনেক বৃহৎ আকারের বিদেশি ও দেশীয় অবকাঠামো প্রকল্প এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্মুখীন এবং তহবিল, নির্মাণ ও নিরাপত্তা সব কিছুই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিনিয়োগকারীরা কিছু প্রকল্প সমূলে খারিজ করে দিতে পারেন।
জাপান দেশটির বৃহত্তম ঋণদাতা, যারা তাদের সরকারি উন্নয়ন সহায়তা ও রেয়াতি ঋণের মাধ্যমে মোট ঋণের ৩৬ শতাংশ ঋণ প্রদান করে।
তা ছাড়া, অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের জন্য মায়ানমারের ঋণ ও সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে, যার ফলে দেশটির ঋণের পরিমাণ বাড়তে পারে। আন্তর্জাতিক ঋণ প্রতিবেদন ২০২৪ অনুসারে, মায়ানমারের মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ১২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। জাপান দেশটির বৃহত্তম ঋণদাতা, যারা তাদের সরকারি উন্নয়ন সহায়তা ও রেয়াতি ঋণের মাধ্যমে মোট ঋণের ৩৬ শতাংশ প্রদান করে। ১৫ শতাংশ বেসরকারি ঋণদাতাদের কাছ থেকে, প্রায় ২৮ শতাংশ বিশ্বব্যাঙ্ক এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক-সহ বহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এবং প্রায় ৬ শতাংশ চিনের কাছ থেকে গৃহীত হয়েছে। অতিরিক্ত যে কোনও ঋণই মায়ানমারের ঋণের বোঝা বৃদ্ধিই করতে থাকবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার জটিল প্রভাবের মাঝে মায়ানমার আটকে থাকায় বিদেশি-সমর্থিত অবকাঠামো উন্নয়নের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতই থেকে যাবে এবং তা উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও অস্থিরতার মধ্যে আটকে থাকবে।
অমিত রঞ্জন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অফ সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ-এর রিসার্চ ফেলো।
শ্রীপর্ণা ব্যানার্জি অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.