-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ভারত এবং ইন্দোনেশিয়া একটি স্থিতিস্থাপক নিকেল-থেকে-ইভি সরবরাহ শৃঙ্খল তৈরি করতে পারে, যা সাশ্রয়ী মূল্যের বৈদ্যুতিক যানবাহন আয়ত্তে আনে এবং টেকসই পরিবহণের জন্য একটি দক্ষিণ-দক্ষিণ মডেল স্থাপন করে।
২০৩০ সালের মধ্যে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহার ৩০ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ভারতের ইভি৩০@৩০ উদ্যোগটি গতি হারাচ্ছে কম গ্রহণের কারণে, যার পিছনে আছে সম্ভবত ঐতিহ্যবাহী জ্বালানিভিত্তিক যানবাহনের তুলনায় উচ্চ প্রাথমিক খরচ। এর কারণ হিসেবে ভারতে ইভি ব্যাটারি তৈরির উচ্চ ইনপুট খরচের কথা বলা যেতে পারে। উৎপাদন খরচের একটি বড় অংশ নিকেলের সঙ্গে জড়িত, যার জন্য ভারত সম্পূর্ণরূপে আমদানি-নির্ভর। যদিও অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং মজুত তৈরি করা একটি দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প, একটি তাৎক্ষণিক সমাধান ভারতের সর্ব-আবহাওয়া মিত্র এবং নিকেলের বৃহত্তম বৈশ্বিক উৎপাদক ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সরাসরি অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার মধ্যে নিহিত।
উৎপাদন খরচের একটি বড় অংশ নিকেলের সঙ্গে জড়িত, যার জন্য ভারত সম্পূর্ণরূপে আমদানি-নির্ভর।
ভারতের নেট-শূন্যের প্রতিশ্রুতি এবং স্থিতিশীল উন্নয়ন অর্জন মূলত ইভি ব্যবহার ত্বরান্বিত করার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। পরিবহণ ক্ষেত্র ভারতে গ্রিনহাউস গ্যাসের তৃতীয় বৃহত্তম নির্গমনকারী হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। দেশে যানবাহনের ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে, এই খাতের বিদ্যুদয়ন একটি জরুরি অগ্রাধিকার। তবে, ভারতে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহারবৃদ্ধি চাহিদা ও সরবরাহ উভয় দিকের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়, যার মধ্যে রয়েছে উচ্চ খরচ, সীমিত চার্জিং পরিকাঠামো, উচ্চ আমদানি নির্ভরতা এবং খণ্ডিত মূল্যশৃঙ্খল। এই বিদ্যুদয়ন প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল গুরুত্বপূর্ণ খনিজ আমদানি নির্ভরতা, বিশেষ করে নিকেলের উপর নির্ভরতা হ্রাস করা। ব্যাটারির বিকল্প উপাদান এসে যাওয়া সত্ত্বেও, নিকেল ব্যবহারের দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক রয়ে গেছে এবং ইভি মূল্যশৃঙ্খলে ধাতুটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনপুট হিসাবে থাকবে। এই প্রেক্ষাপটে, ভারতের সীমিত নিকেল মজুতের কারণে, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে মূল্যশৃঙ্খল সুরক্ষিত করা একটি অনুকূল নীতিগত পছন্দ হবে। এই অ্যাজেন্ডাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য, দিল্লি ও জাকার্তা ভারত-ইন্দোনেশিয়া যৌথ অর্থনৈতিক ও আর্থিক সংলাপ (জেইএফডি) আয়োজনে সম্মত হয়েছে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সহযোগিতা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হতে পারে।
চিত্র ১: বিভিন্ন ব্যাটারির গঠন
সূত্র: ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট
ইন্দোনেশিয়ায় নিকেল বুম
ইন্দোনেশিয়ায় নিকেলের সবচেয়ে বেশি মজুত রয়েছে এবং দেশটি বিশ্বব্যাপী নিকেল সরবরাহের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করে। ইন্দোনেশিয়ার সরকার ইভি ব্যাটারি মূল্যশৃঙ্খল দখল করতে এবং নিকেল উৎপাদনে সম্পূর্ণ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য অ-প্রক্রিয়াজাত নিকেল আকরিক রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। এর ফলে সেদেশে ইভি সরবরাহ শৃঙ্খলে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে নিকেল প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদেশী প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহিত হয়েছে, বিশেষ করে চিন থেকে। অন্যান্য দেশ এবং তাদের বৃহৎ সংস্থাগুলির সঙ্গে সহযোগিতা ইন্দোনেশিয়াকে ইভি সরবরাহ শৃঙ্খলে একটি শক্তিশালী অবস্থান দিয়েছে, এবং এটিকে বিশ্বব্যাপী সবুজ শক্তি পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ে পরিণত করেছে। তবে, নিকেলের সরবরাহ বৃদ্ধি করার সময় ইন্দোনেশিয়ার বিশাল বাজারের আকার বিপরীতমুখী হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার লিথিয়াম, ইন্দোনেশিয়ান নিকেল এবং ভারতীয় সেল-উৎপাদন আয়তনকে সংযুক্ত করলে একটি ইন্দো-প্যাসিফিক ব্যাটারি করিডোর তৈরি হতে পারে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রক্রিয়াজাত নিকেলের অতিরিক্ত সরবরাহ বিশ্বব্যাপী মূল্য হ্রাসের কারণ হয়েছিল। নিকেলের দাম হ্রাসের ফলে প্রাথমিকভাবে অন্য রপ্তানিকারক দেশগুলির জন্য প্রতিযোগিতা করা কঠিন হয়ে পড়েছিল, কিন্তু অবশেষে সংকট ইন্দোনেশিয়াকেও প্রভাবিত করেছিল। ইন্দোনেশিয়ার স্মেল্টারদের কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে এবং শীঘ্রই উৎপাদন কমাতে হতে পারে। তাছাড়া, লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারির বৃদ্ধি এবং ইভি গ্রহণের ধীরগতির কারণে চাহিদা কমে যাওয়া দামের উপর আরও নিম্নমুখী চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল ডাচ রোগের মতো ঘটনার সম্ভাব্য উত্থান, যেখানে দেশের ঐতিহ্যবাহী রপ্তানি ক্রমবর্ধমান নিকেল খাতের কারণে স্থবির হয়ে পড়ে। ইন্দোনেশিয়া যদি তার দেশীয় ইভি উৎপাদন পরিকল্পনাকে পুঁজি করতে না পারে, তাহলে ক্ষেত্রভিত্তিক অদক্ষতার কারণে এর দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে।
আই+আই অংশীদারিত্ব
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর ভারত সফরের সময়, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছিলেন, দুই নেতা ‘নিকেল এবং অন্যান্য কৌশলগত খনিজ পদার্থের জন্য যৌথ অনুসন্ধান এবং নিম্ন ধারার প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেন’। তার পারফরম্যান্স লিঙ্কড ইনসেনটিভ (পিএলআই) প্রকল্পের অধীনে, ভারত ৫০ জিডব্লিউএইচ ব্যাটারি-সেল কারখানাগুলিকে ভর্তুকি দিচ্ছে। এই কারখানাগুলিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে নিকেল ইনপুট প্রয়োজন, এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য এই চাহিদা বজায় থাকবে, এমনকি যদি উৎপাদন ধীরে ধীরে নিকেল-মুক্ত ব্যাটারিতেও স্থানান্তরিত হয়। চাহিদা নিশ্চিত করতে এবং মূল্য ঝুঁকি কমানোর জন্য ইন্দোনেশিয়া ভারতীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তি করতে পারে। নিকেল আকরিক রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞার ফলে ইন্দোনেশিয়ার নিকেল গলানো এবং পরিশোধন ক্ষমতায় সুবিশাল চিনা বিনিয়োগ দেখা গিয়েছে, যা সময়ের সাথে সাথে উৎপাদন খরচ কমিয়ে দিয়েছে। একটি একক দেশ থেকে বিনিয়োগের কেন্দ্রীকরণ ঝুঁকি বাড়ায়, যা কমাতে হলে ইন্দোনেশিয়াকে তার তহবিলদাতাদের পোর্টফোলিওকে বৈচিত্র্যময় করতে হবে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন খনিজ ক্রয় সংস্থা খনিজ বিদেশ ইন্ডিয়া লিমিটেড (কাবিল) এবং মূল্যশৃঙ্খলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, বিশেষ করে ব্যাটারি নির্মাতারা, ইন্দোনেশিয়াকে বৈচিত্র্যময় এবং আরও টেকসই বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে। একটি বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগকারী মিশ্রণ জাকার্তার সঙ্গে দর কষাকষির ক্ষমতা বজায় রাখবে, প্রযুক্তি স্থানান্তরকে ত্বরান্বিত করবে, এবং ভারতের ইভি বাজারে আরও বেশি প্রবেশাধিকার প্রদান করবে। একটি যৌক্তিক পরবর্তী পদক্ষেপ হল বিশ্বের বৃহত্তম লিথিয়াম উৎপাদক অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় সরবরাহ শৃঙ্খল সহযোগিতা , যার ইতিমধ্যেই ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে একটি পরিবহণ-ডিকার্বনাইজেশন চুক্তি রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার লিথিয়াম, ইন্দোনেশিয়ান নিকেল এবং ভারতীয় সেল-উৎপাদন আয়তনকে সংযুক্ত করলে একটি ইন্দো-প্যাসিফিক ব্যাটারি করিডোর তৈরি হতে পারে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে সংগৃহীত ইনপুট ব্যবহার করে ভারতে তৈরি ইভি শীঘ্রই জার্মানির রাজপথ অটোবাহন ধরে ছুটে চলতে পারে।
নয়াদিল্লি ও জাকার্তা উভয়ই বর্ধিত সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছে, এবং ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ও ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধির জন্য একটি প্রকল্প চালু করেছে। আচেহ-এ সাবাং গভীর সমুদ্র বন্দরের উন্নয়ন বাণিজ্যের সময় ও পণ্যসম্ভারের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে। ভারত-ইন্দোনেশিয়া সংযোগে বিনিয়োগের অর্থ ফেরতের (রিটার্ন) গণনার সময় নিকেল বাণিজ্য বৃদ্ধির সুবিধাগুলি বিবেচনা করা উচিত। স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে, উভয় সরকারই জি২০-তে নতুন খনির প্রকল্পগুলিকে বিশ্বব্যাপী পরিবেশগত, সামাজিক ও শাসন (ইএসজি) নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে — ভারতের "লাইফ" উদ্যোগ কম-কার্বন সরবরাহ শৃঙ্খলের উপর জোর দেয়, অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়া চায় তার "সবুজ-নিকেল" লেবেল পশ্চিমী ক্রেতাদের দ্বারা স্বীকৃত হোক। উভয় রাজধানীকে জি২০ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড ইমার্জিং টেক এবং কোয়াড ক্রিটিক্যাল মিনারেলস পার্টনারশিপের মতো উদীয়মান-প্রযুক্তি ফোরামে আরও সমন্বিত করা উচিত, যা ব্যাটারি সরবরাহ শৃঙ্খলের জন্য ইএসজি এবং ট্রেসেবিলিটি মানগুলির সমন্বিত খসড়া করার জন্য একটি জায়গা তৈরি করবে। ইভি ব্যাটারি সরবরাহ শৃঙ্খলের জন্য যৌথ ভারত-ইন্দোনেশিয়া মানগুলি ছাড়মূলক জলবায়ু অর্থায়নকে আরও সহজ করে তুলবে, এবং বিনিয়োগ পোর্টফোলিওকে আরও বৈচিত্র্যময় করবে। দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা তাদের তুলনামূলক সুবিধা ব্যবহার করতে, বাজার দক্ষতা বজায় রাখতে, এবং বিশ্বকে সাশ্রয়ী মূল্যের, দায়িত্বশীল বিদ্যুদয়নের জন্য দক্ষিণ-দক্ষিণ পথ দেখাতে সাহায্য করবে।
উপসংহার
নিকেলের দামের ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়ার স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তা এবং ভারতে দেশীয়ভাবে উৎপাদিত ব্যাটারি ইনপুটের চাহিদা একত্রে কাজ করে। ইন্দোনেশিয়ার খনিজ উত্তোলকেরা যেমন ভারতীয় সেল নির্মাতাদের সঙ্গে চুক্তি করতে পারে, তেমনই ভারত সরকার ইন্দোনেশিয়ার নিকেল ব্যবহারকারী উৎপাদকদের ভর্তুকি দিতে পারে এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে সেল-ইনপুট আমদানিতে শুল্ক কমাতে পারে। সহযোগিতামূলক অর্থায়ন, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং মূল্যশৃঙ্খল দখল বিশ্বব্যাপী ইভি বাজারের ভবিষ্যৎ তৈরি করে দিতে পারে। ইন্দোনেশিয়া থেকে সংগৃহীত ইনপুট ব্যবহার করে ভারতে তৈরি ইভি শীঘ্রই জার্মানির রাজপথ অটোবাহন ধরে ছুটে চলতে পারে।
আর্য রায় বর্ধন অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর নিউ ইকোনমিক ডিপ্লোম্যাসির রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Arya Roy Bardhan is a Research Assistant at the Centre for New Economic Diplomacy, Observer Research Foundation. His research interests lie in the fields of ...
Read More +