-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
এই সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করার পর সম্ভবত প্রথম বারের মতো এত স্পষ্ট এবং প্রকাশ্যে ইরান একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার কথা ঘোষণা করেছে। পুরো কাহিনির মধ্যে, যখন ট্রাম্প তাঁর কৃতিত্বের সারণিতে আর একটি যুদ্ধবিরতি যোগ করার আশা করেছিলেন এবং ইজরায়েল ইরানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আঘাত হানতে চাইছিল, তেহরান তার ধর্মতাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা বজায় রাখতে পেরেছে, যা ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছে।
বর্তমান যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব ভঙ্গুর। ইজরায়েলি দৃষ্টিকোণ থেকে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে আনা একটি উল্লেখযোগ্য বিজয় ছিল। তবে, ট্রাম্পও লাল রেখা টানতে চেয়েছিলেন এবং হামলার বাইরে মার্কিন ভূমিকা প্রসারিত করতে চাননি। ইরান যাতে পারমাণবিক শক্তি অর্জন না করে তার জন্য এই ব্যবস্থার কথা ট্রাম্প গত বহু বছর ধরে প্রচার করে আসছেন।
কম্পনের পর
বিপরীত দিকে ইরানের জন্য, গত কয়েক মাসের ঘটনাবলি এবং সে দেশের আকাশে ইজরায়েলের সরাসরি সামরিক আধিপত্যের প্রয়োগ, রাষ্ট্রের গত ৪৬ বছর ধরে চলে আসা রাজনীতিকে নাড়া দিতে পারে এবং পুনর্গঠন করতে পারে। যদিও ইরানের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ তার দুর্বল প্রকৃতি সত্ত্বেও ইজরায়েলের অনুভূত অবিনাশী বিমান প্রতিরক্ষা ঢালকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম হয়েছিল, তবুও এর শক্তি এবং প্রতিরোধের দীর্ঘমেয়াদি অবস্থা, তার সামরিক দক্ষতা সহ, বেআব্রু হয়ে গিয়েছে।
ইরান ইতিমধ্যেই ৭০০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গেছে, তাদের বিরুদ্ধে শত্রুর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আকাশে ইজরায়েলের অবাধ কর্তৃত্ব এমন একটি অপ্রতিরোধ্য বিমান শক্তির আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল যা ইরানের ক্ষয়প্রাপ্ত বিমান প্রতিরক্ষা বিবেচনা করে ইচ্ছামত ব্যবহার করা যায়। কিন্তু তার চেয়েও বেশি করে তাদের গোয়েন্দা বাহিনীর স্থলে অনুপ্রবেশ ইরানে জরুরি সতর্কতা জাগিয়ে তুলবে। দীর্ঘদিন ধরে ইজরায়েল ইরানের রাজনীতি ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে তাদের নিজেদের লোকজন ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে, এবং তার ফলে যুদ্ধের সময় শক্তিশালী ইসলামিক রেভলিউশলারি গার্ড কোর (আইআরজিসি), গোয়েন্দা সংস্থা এবং প্রতিরক্ষা নেতৃত্বের ক্ষমতা হরণ করার জন্য তা একত্রিত হয়েছিল। প্রতিক্রিয়া হিসাবে, ইরান ইতিমধ্যেই ৭০০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গিয়েছে, এবং তাদের বিরুদ্ধে শত্রুর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড ইতিমধ্যেই কার্যকর করা হয়েছে।
ক্ষমতা কীভাবে বজায় রাখা হয়
ইসলামি বিপ্লবের সত্যতা ও দীর্ঘায়ুতার বিরুদ্ধে যুদ্ধকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসাবেও বাজারজাত করা হয়েছিল। শিয়া ইসলামের ক্ষমতার আসনটিকে বছরের পর বছর ধরে অভ্যন্তরীণ সংকট এবং পরিবর্তনের দাবির মোকাবিলা করতে হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মহিলাদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ থেকে শুরু করে মূলত তরুণ জনগোষ্ঠীর ধারাবাহিক ভিন্নমত। তবে, শাসকগোষ্ঠী তাদের নিজস্ব সমর্থনভিত্তি — যা সংখ্যায় কম নয় — এবং দমনমূলক কৌশল ব্যবহার করে ক্ষমতার দখল বজায় রেখেছে। ক্ষমতা কেন্দ্রগুলি মাঝে মাঝে এই চাপগুলি মোকাবিলা করার জন্য তাদের নিজস্ব নির্দেশাবলি শিথিল করার অনুমতি দিয়েছে। বিশেষজ্ঞ ভালি নসর উল্লেখ করেছেন কীভাবে দেশের নৈতিক পুলিশ, যা গাশত-ই-এরশাদ (নির্দেশিকা টহল) নামে পরিচিত, তাদের হিজাব টহলের সময় মহিলাদের জন্য বাধ্যতামূলক হিজাবের প্রয়োগকে শিথিল করেছে। প্রায়শই তারা রাজধানীর তরুণ ও সমৃদ্ধ এলাকা উত্তর তেহরানের মতো কিছু অংশে এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে পুলিশকে নজর অন্য দিকে ঘুরিয়ে রাখতে দিয়েছে।
রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে এটা প্রায় নিশ্চিত যে আয়াতোল্লা, আইআরজিসি ও সরকারের নির্বাচিত নেতৃত্ব, যা বর্তমানে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের মধ্যপন্থী নেতৃত্বের হাতে, তার কাঠামো স্থায়ীভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। সর্বোচ্চ নেতা ইতিমধ্যেই ৮০-র কোঠার শেষের দিকে, এবং আশা করা হচ্ছে যে তাঁর স্থলাভিষিক্তের জন্য উত্তরাধিকার পরিকল্পনা কার্যকর হবে। পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে তাঁর পুত্র মোজতবা খামেনেই-এর যোগ্যতা নিয়ে কয়েক বছর আগে তীব্র বিতর্ক হয়েছিল; তখন সংশ্লিষ্ট কণ্ঠস্বর ধর্মতত্ত্ব এবং ধর্মীয় নেতৃত্বের মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিবর্তে স্বজনপোষণমূলক ক্ষমতা হস্তান্তরের ধারণা নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছিল।
পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন
১৯৯২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আইআরজিসি-তে সর্বোচ্চ নেতা থাকা মোহাভেদি কেরমানির নেতৃত্বে ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদকে উত্তরসূরি নির্বাচনের প্রক্রিয়া পরিচালনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ৯৩ বছর বয়সে খামেনেই-এর চেয়ে বয়সে বড় কেরমানির নির্বাচন যুক্তিসঙ্গতভাবে এ কথাই তুলে ধরে যে, ভবিষ্যতের পথ নির্ধারণের জন্য বিপ্লবের আদর্শের সবচেয়ে বয়স্ক প্রতিনিধিই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সত্তা হিসেবে রয়ে গিয়েছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, মোজতবার পাশাপাশি আরেকটি নাম ছিল ইব্রাহিম রাইসির, যিনি ২০২৪ সালের মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন।
৯৩ বছর বয়সে খামেনেই-এর চেয়ে বয়সে বড় কেরমানির নির্বাচন যুক্তিসঙ্গতভাবে এ কথাই তুলে ধরে যে, ভবিষ্যতের পথ নির্ধারণের জন্য বিপ্লবের আদর্শের সবচেয়ে বয়স্ক প্রতিনিধিই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সত্তা হিসেবে রয়ে গিয়েছেন।
অন্যান্য দৃষ্টিভঙ্গিও প্রচুর। এর মধ্যে একটি হল আয়াতোল্লার তুলনায় আইআরজিসির বর্ধিত ক্ষমতা। ইরানে দীর্ঘদিন ধরে 'সংস্কারবাদী বনাম রক্ষণশীল' আলোচনা চলছে। এটি মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি রাষ্ট্রের মধ্যে একটি যেখানে এক ধরনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন রয়েছে (যদিও সর্বোচ্চ নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত)। পরিহাসের কথা অঞ্চলের এমন অন্য রাষ্ট্রটি হল ইজরায়েল। যাই হোক, এই সংমিশ্রণের ফলাফল ছিল ২০০৬ সালে শুরু হওয়া পি৫+১ দেশগুলির সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা, যা ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ)-তে পরিণত হয়। ২০১৮ সালে ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমেরিকা একতরফাভাবে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পর এর পতন আলোচনা-বিরোধী বাস্তুতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করে তোলে, যার ফলাফল ২০২১ সালে রাইসির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছিল।
জল্পনা-কল্পনা যাই হোক না কেন, ইরানের ক্ষমতাকেন্দ্রগুলির জন্য স্বাভাবিক পরবর্তী পদক্ষেপ হবে অবশ্যই এখন মাথা নত করা, প্রচলিত ক্ষমতা পুনর্গঠন করা, তাদের আচ্ছন্ন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা গতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা, এবং জাতীয়তাবাদের উচ্ছ্বাসের চারপাশে জনমতকে একত্রিত করা। উত্তরহীন প্রশ্ন হল, গত কয়েক সপ্তাহে শাসকগোষ্ঠী যা ভোগ করেছে তা বিবেচনা করে, ইরানের ক্ষমতার অভ্যন্তরীণ বৃত্তগুলি কি দেশের ইতিহাসের পরবর্তী পর্যায়টিকে একই খেলোয়াড়দের হাতে তুলে দেবে, নাকি তারা ক্ষমতা, রাজনীতি ও জনগণের প্রশ্নে নতুন ভাবনা দাবি করবে?
এই ভাষ্যটি প্রথম এনডিটিভি -তে প্রকাশিত হয়েছিল।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Kabir Taneja is a Deputy Director and Fellow, Middle East, with the Strategic Studies programme. His research focuses on India’s relations with the Middle East ...
Read More +